দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মধ্যপাড়ার খোট্টারডাঙায় ভয়াবহ শব্দ দূষণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। শব্দের মাত্রাতিরিক্ত তীব্রতায় এখানকার মানুষ ক্রমশ বধিরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। আইনের তোয়াক্কা না করেই দিনের পর দিন আবাসিক এলাকায় শব্দ দূষণ তৈরি করছে একটি চক্র। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ দিলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মধ্যপাড়ার খোট্টারডাঙায় দিনের পর দিন এই শব্দ সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। শব্দ দূষণ বিধিমালা ২০০৬ এর ১১ বিধি অনুসারে আবাসিক এলাকার ৫০০ মিটারের মধ্যে ইট পাথর ভাঙার মেশিন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না এই পাথর ব্যবসায়ী চক্র। দিন রাত মেশিন দিয়ে পাথর ভাঙার ফলে পাথরের ডাইসের গুড়া বাতাসে উড়ে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব বিষয় উল্লেখ করে গতকাল বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, শব্দ দূষণ আইনের তোয়াক্কা না করেই পাথর ভাঙার মেশিন ব্যবহারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন ওই এলাকার লোকজন। বিশেষ করে হুমকির মুখে রয়েছে শিশুদের স্বাস্থ্য। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার। এমনকি পাশেই মসজিদ থাকায় মুসল্লিদের ইবাদতেও বিঘ্ন ঘটছে মেশিনের শব্দে। শব্দ দূষণ আইনে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও নিজেদের স্বার্থে দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক, জাহাঙ্গীর আলম, আল আমিন দিনের পর দিন এই অপকর্ম করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী অব্দুল লতিফ বলেন, ২০০৬ আইনের ১৮ বিধি অনুসারে, শব্দ দূষণ দন্ডনীয় অপরাধ। শব্দ দূষণের কারণে জনস্বাস্থ হুমকির মুখে পড়তে পারে। তবে চিকিৎসকদের মতে, শব্দ দূষণের কারণে কেবল শ্রবণশক্তি নয়, মানুষের আচরণগত পরিবর্তন, স্নায়বিক রোগ এবং শিশুদের মানসিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শব্দের সহনীয় মাত্রা দিনে ৪৫ ডেসিবেল এবং রাতে ৩৫ ডেসিবেল। অথচ সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, জুড়ীতে চলাচলকারী যানবাহনের হর্ণের মাত্রা ১২০ থেকে ১৮০ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা স্বাভাবিক মাত্রার প্রায় তিন-চার গুণ বেশি। গত দেড় যুগে এই শব্দ দূষণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
